Surah As-Sajda - Bengali Translation by Zohurul Hoque
الٓمٓ
আলিফ, লাম, মীম।
Surah As-Sajda, Verse 1
تَنزِيلُ ٱلۡكِتَٰبِ لَا رَيۡبَ فِيهِ مِن رَّبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
গ্রন্থখানার অবতারণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই, বিশ্বজগতের প্রভুর কাছ থেকে।
Surah As-Sajda, Verse 2
أَمۡ يَقُولُونَ ٱفۡتَرَىٰهُۚ بَلۡ هُوَ ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّكَ لِتُنذِرَ قَوۡمٗا مَّآ أَتَىٰهُم مِّن نَّذِيرٖ مِّن قَبۡلِكَ لَعَلَّهُمۡ يَهۡتَدُونَ
না কি তারা বলে যে তিনি এটি রচনা করেছেন? না, এটি মহাসত্য তোমার প্রভুর কাছ থেকে যেন তুমি সতর্ক করতে পার এমন এক জাতিকে যাদের কাছে তোমরা আগে কোনো সতর্ককারী আসেন নি, যাতে তারা সৎপথে চলতে পারে।
Surah As-Sajda, Verse 3
ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ مَا لَكُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَلِيّٖ وَلَا شَفِيعٍۚ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ
আল্লাহ্ই তিনি যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুইয়ের মধ্যবর্তী সব-কিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর তিনি অধিষ্ঠিত হলেন আরশের উপরে। তাঁকে বাদ দিয়ে তোমাদের জন্য অভিভাবক কেউ নেই আর সুপারিশকারীও নেই। তবুও কি তোমরা মনোযোগ দেবে না
Surah As-Sajda, Verse 4
يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ ثُمَّ يَعۡرُجُ إِلَيۡهِ فِي يَوۡمٖ كَانَ مِقۡدَارُهُۥٓ أَلۡفَ سَنَةٖ مِّمَّا تَعُدُّونَ
মহাকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত বিষয়-কর্ম তিনি পরিচালনা করেন, তারপর এটি তাঁর দিকে উঠে আসবে একদিন যার পরিমাপ হচ্ছে তোমরা যা গণনা কর তার এক হাজার বছর।
Surah As-Sajda, Verse 5
ذَٰلِكَ عَٰلِمُ ٱلۡغَيۡبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ ٱلۡعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
এজনই হচ্ছেন অদৃশ্যের ও প্রকাশ্যের পরিজ্ঞাতা, মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা
Surah As-Sajda, Verse 6
ٱلَّذِيٓ أَحۡسَنَ كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقَهُۥۖ وَبَدَأَ خَلۡقَ ٱلۡإِنسَٰنِ مِن طِينٖ
যিনি সুন্দর করেছেন প্রত্যেকটি জিনিস যা তিনি সৃষ্টি করেছেন, আর তিনি মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন কাদা থেকে।
Surah As-Sajda, Verse 7
ثُمَّ جَعَلَ نَسۡلَهُۥ مِن سُلَٰلَةٖ مِّن مَّآءٖ مَّهِينٖ
তারপর তার বংশধর সৃষ্টি করলেন এক তুচ্ছ তরল পদার্থের নির্যাস থেকে।
Surah As-Sajda, Verse 8
ثُمَّ سَوَّىٰهُ وَنَفَخَ فِيهِ مِن رُّوحِهِۦۖ وَجَعَلَ لَكُمُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَٰرَ وَٱلۡأَفۡـِٔدَةَۚ قَلِيلٗا مَّا تَشۡكُرُونَ
তারপর তিনি তাকে সুঠাম করলেন, এবং তাতে ফুঁকে দিলেন তাঁর আত্মা থেকে, আর তোমাদের জন্য তৈরি করলেন শ্রবণশক্তি ও দর্শনশক্তি ও অন্তঃকরণ। অল্পমাত্রায়ই তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।
Surah As-Sajda, Verse 9
وَقَالُوٓاْ أَءِذَا ضَلَلۡنَا فِي ٱلۡأَرۡضِ أَءِنَّا لَفِي خَلۡقٖ جَدِيدِۭۚ بَلۡ هُم بِلِقَآءِ رَبِّهِمۡ كَٰفِرُونَ
আর তারা বলে -- ''কি, যখন আমরা মাটিতে মিলিয়ে যাই, তখন কি আমরা নতুন সৃষ্টিতে পৌঁছব?’’ বস্তুত তারা তাদের প্রভুর সাথে মুলাকাত হওয়া সন্বন্ধে অবিশ্বাসী।
Surah As-Sajda, Verse 10
۞قُلۡ يَتَوَفَّىٰكُم مَّلَكُ ٱلۡمَوۡتِ ٱلَّذِي وُكِّلَ بِكُمۡ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّكُمۡ تُرۡجَعُونَ
তুমি বলো -- ''মালাকুল মউত যার উপরে তোমাদের কার্যভার দেওয়া হয়েছে সে-ই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবে, তারপর তোমাদের প্রভুর কাছেই তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।’’
Surah As-Sajda, Verse 11
وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذِ ٱلۡمُجۡرِمُونَ نَاكِسُواْ رُءُوسِهِمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ رَبَّنَآ أَبۡصَرۡنَا وَسَمِعۡنَا فَٱرۡجِعۡنَا نَعۡمَلۡ صَٰلِحًا إِنَّا مُوقِنُونَ
আর তুমি যদি দেখতে পেতে যখন অপরাধীরা তাদের মাথা হেঁট করবে তাদের প্রভুর সামনে -- ''আমাদের প্রভু! আমরা দেখতে পাচ্ছি ও শুনতে পাচ্ছি, সুতরাং আমাদের ফেরত পাঠিয়ে দাও, আমরা সৎকর্ম করব, নিঃসন্দেহ আমরা সুনিশ্চিত।’’
Surah As-Sajda, Verse 12
وَلَوۡ شِئۡنَا لَأٓتَيۡنَا كُلَّ نَفۡسٍ هُدَىٰهَا وَلَٰكِنۡ حَقَّ ٱلۡقَوۡلُ مِنِّي لَأَمۡلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنَ ٱلۡجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ أَجۡمَعِينَ
আর আমরা যদি চাইতাম তবে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে দিতাম তার পথনির্দেশ, কিন্তু আমার থেকে বক্তব্য ন্যায়সংগত হয়েছে -- 'আমি আলবৎ জাহান্নামকে ভর্তি করবো একই সঙ্গে জিনদের ও মানুষদের থেকে।’
Surah As-Sajda, Verse 13
فَذُوقُواْ بِمَا نَسِيتُمۡ لِقَآءَ يَوۡمِكُمۡ هَٰذَآ إِنَّا نَسِينَٰكُمۡۖ وَذُوقُواْ عَذَابَ ٱلۡخُلۡدِ بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ
সেজন্য -- ''আস্বাদন করো, যেহেতু তোমাদের এই দিনটির সাক্ষাৎ পাওয়াকে তোমারা ভুলে গিয়েছিলে। আমরাও তাইতো তোমাদের ভুলে গেছি, কাজেই তোমরা দীর্ঘস্থায়ী শাস্তি আস্বাদন করো যা তোমরা করে চলেছিলে সেজন্য।
Surah As-Sajda, Verse 14
إِنَّمَا يُؤۡمِنُ بِـَٔايَٰتِنَا ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُواْ بِهَا خَرُّواْۤ سُجَّدٗاۤ وَسَبَّحُواْ بِحَمۡدِ رَبِّهِمۡ وَهُمۡ لَا يَسۡتَكۡبِرُونَ۩
কেবল তারাই আমাদের নির্দেশাবলীতে বিশ্বাস করে যারা, যখন তাদের এসব স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, সিজদারত হয়ে লুটিয়ে পড়ে, আর তাদের প্রভুর প্রশংসার সাথে জপতপ করে, আর তারা গর্ববোধ করে না।
Surah As-Sajda, Verse 15
تَتَجَافَىٰ جُنُوبُهُمۡ عَنِ ٱلۡمَضَاجِعِ يَدۡعُونَ رَبَّهُمۡ خَوۡفٗا وَطَمَعٗا وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ
তারা বিছানা থেকে তাদের পার্শ্ব ত্যাগ করে তাদের প্রভুকে ডাকতে ডাকতে ভয়ে ও আশায়, আর আমরা তাদের যা রিযেক দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে।
Surah As-Sajda, Verse 16
فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ
সুতরাং কোনো সত্ত্বা জানে না চোখজুড়ানো কী তাদের জন্য লুকোনো রয়েছে, -- একটি পুরস্কার যা তারা করে যাচ্ছিল তার জন্য।
Surah As-Sajda, Verse 17
أَفَمَن كَانَ مُؤۡمِنٗا كَمَن كَانَ فَاسِقٗاۚ لَّا يَسۡتَوُۥنَ
তাহলে কি যে মুমিন সে তার মতো যে সত্যত্যাগী? তারা সমতুল্য নয়।
Surah As-Sajda, Verse 18
أَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَٰتِ فَلَهُمۡ جَنَّـٰتُ ٱلۡمَأۡوَىٰ نُزُلَۢا بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ
যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করছে তাদের জন্য তবে রয়েছে চির-উপভোগ্য উদ্যান -- একটি প্রীতি-সংবর্ধনা যা তারা করে যাচ্ছিল তার জন্য।
Surah As-Sajda, Verse 19
وَأَمَّا ٱلَّذِينَ فَسَقُواْ فَمَأۡوَىٰهُمُ ٱلنَّارُۖ كُلَّمَآ أَرَادُوٓاْ أَن يَخۡرُجُواْ مِنۡهَآ أُعِيدُواْ فِيهَا وَقِيلَ لَهُمۡ ذُوقُواْ عَذَابَ ٱلنَّارِ ٱلَّذِي كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ
কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে যারা সীমালংঘন করেছে তাদের আবাস হচ্ছে আগুন। যতবার তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে তাদের তাতে ফিরিয়ে আনা হবে, আর তাদের বলা হবে -- ''আগুনের শাস্তি আস্বাদন করো যেটিকে তোমরা মিথ্যা বলতে।’’
Surah As-Sajda, Verse 20
وَلَنُذِيقَنَّهُم مِّنَ ٱلۡعَذَابِ ٱلۡأَدۡنَىٰ دُونَ ٱلۡعَذَابِ ٱلۡأَكۡبَرِ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُونَ
আর আমরা অবশ্যই লঘু শাস্তি থেকে তাদের আস্বাদন করাব বৃহত্তর শাস্তির উপরি, যেন তারা ফিরে আসে।
Surah As-Sajda, Verse 21
وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِـَٔايَٰتِ رَبِّهِۦ ثُمَّ أَعۡرَضَ عَنۡهَآۚ إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَ مُنتَقِمُونَ
আর কে তার চাইতে বেশী অন্যায়কারী যাকে তার প্রভুর নির্দেশাবলী দ্বারা উপদেশ দেওয়া হয়েছে, তথাপি সে তা থেকে ফিরে যায়? নিঃসন্দেহ অপরাধীদের থেকে আমরা পরিণতি আদায় করেই থাকি।
Surah As-Sajda, Verse 22
وَلَقَدۡ ءَاتَيۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَٰبَ فَلَا تَكُن فِي مِرۡيَةٖ مِّن لِّقَآئِهِۦۖ وَجَعَلۡنَٰهُ هُدٗى لِّبَنِيٓ إِسۡرَـٰٓءِيلَ
আর আমরা নিশ্চয়ই মূসাকে ধর্মগ্রন্থ দিয়েছিলাম, কাজেই তাঁর প্রাপ্তি সন্বন্ধে তুমি সন্দেহের মধ্যে থেকো না, আর আমরা এটিকে বানিয়েছিলাম ইসরাইলের বংশধরদের জন্য এক পথনির্দেশ।
Surah As-Sajda, Verse 23
وَجَعَلۡنَا مِنۡهُمۡ أَئِمَّةٗ يَهۡدُونَ بِأَمۡرِنَا لَمَّا صَبَرُواْۖ وَكَانُواْ بِـَٔايَٰتِنَا يُوقِنُونَ
আর আমরা তাদের মধ্যে থেকে নেতা দাঁড় করিয়েছিলাম যাঁরা আমাদের নির্দেশের দ্বারা পথনির্দেশ দিতেন যতদিন তারা অধ্যবসায় করত, আর তারা আমাদের নির্দেশাবলী সন্বন্ধে দৃঢ়বিশ্বাস রাখত।
Surah As-Sajda, Verse 24
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَفۡصِلُ بَيۡنَهُمۡ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ فِيمَا كَانُواْ فِيهِ يَخۡتَلِفُونَ
নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনি কিয়ামতের দিনে তাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন সেই বিষয়ে যাতে তারা মতবিরোধ করত।
Surah As-Sajda, Verse 25
أَوَلَمۡ يَهۡدِ لَهُمۡ كَمۡ أَهۡلَكۡنَا مِن قَبۡلِهِم مِّنَ ٱلۡقُرُونِ يَمۡشُونَ فِي مَسَٰكِنِهِمۡۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٍۚ أَفَلَا يَسۡمَعُونَ
এটি কি তাদের জন্য পথনির্দেশ করে না -- তাদের পূর্বে মানবগোষ্ঠীর মধ্যে কত যে আমরা ধ্বংস করেছি যাদের বাড়িঘরের মধ্যে তারা চলাফেরা করেছে? নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শনাবলী রয়েছে। তবুও কি তারা শুনবে না
Surah As-Sajda, Verse 26
أَوَلَمۡ يَرَوۡاْ أَنَّا نَسُوقُ ٱلۡمَآءَ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ ٱلۡجُرُزِ فَنُخۡرِجُ بِهِۦ زَرۡعٗا تَأۡكُلُ مِنۡهُ أَنۡعَٰمُهُمۡ وَأَنفُسُهُمۡۚ أَفَلَا يُبۡصِرُونَ
তারা কি তথাপি দেখে না যে আমরা পানি প্রবাহিত করে নিই অনুর্বর মাটিতে, তখন তার সাহায্যে আমরা উদগত করি ফসল যা থেকে আহার করে তাদের গবাদি-পশু ও তারা নিজেরা? তবুও কি তারা দেখবে না
Surah As-Sajda, Verse 27
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَٰذَا ٱلۡفَتۡحُ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ
আর তারা বলে -- ''কখন এই বিজয় ঘটবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’’
Surah As-Sajda, Verse 28
قُلۡ يَوۡمَ ٱلۡفَتۡحِ لَا يَنفَعُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِيمَٰنُهُمۡ وَلَا هُمۡ يُنظَرُونَ
বলো -- ''বিজয়ের দিনে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের বিশ্বাসে কোনো উপকার হবে না, আর তাদের প্রতীক্ষা করতে হবে না।’’
Surah As-Sajda, Verse 29
فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَٱنتَظِرۡ إِنَّهُم مُّنتَظِرُونَ
অতএব তাদের থেকে তুমি ফিরে এস এবং ইন্তাজার কর, নিঃসন্দেহ তারাও প্রতীক্ষারত রয়েছে।
Surah As-Sajda, Verse 30